সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:২৪ অপরাহ্ন
মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচির ঘোষণায় বিপাকে পড়েছেন মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত অবৈধ কর্মীরা। কর্মসূচি প্রক্রিয়াধীন থাকলেও প্রতিদিনই চলছে ইমিগ্রেশন পুলিশের ধরপাকড় অভিযান। মালয়েশিয়ার ইমিগ্রেশন বিভাগের (জেআইএম) ১ জানুয়ারি থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত পরিচালিত ১৫ হাজার ৯৯৬ অভিযানের মাধ্যমে মোট ৪৭ হাজার ৯৩ অবৈধ অভিবাসীদের আটক করা হয়েছে।
সিন্ডিকেটের ‘বাণিজ্যে’ দালালদের হয়রানি, নাজেহাল নিরীহ বাংলাদেশিরা। ১ আগস্ট থেকে মালয়েশিয়া সরকারের ঘোষিত ‘ব্যাক ফর গুড’ কর্মসূচির আওতায় হয়রানির কারণে দেশে ফিরতে পারছে না তারা।
ডিসেম্বরের ৩১ এর মধ্যে না ফিরলে কঠিন ঝামেলায় পড়তে হবে। এ সময়ের মধ্যে ধরপাকড় না করতে এবং ব্যাক ফর গুড প্রক্রিয়া সহজীকরণের লক্ষ্যে ইমিগ্রেশনের সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ হাইকমিশনের সংশ্লিষ্টরা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। আজ সকাল ১০টায় পুত্রাজায়ায় চলছে এ জরুরি বৈঠক। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত বিস্তারিত জানা যায়নি।
দেশটির উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক মোহাম্মদ আজিস জামান বলেছেন, বিদেশিরা যেসব জায়গায় অবৈধভাবে কেন্দ্রীভূত হয় সেখানে জেআইএম সর্বদা সম্পদ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভাগ করে নেওয়ার সাথে জড়িত সমন্বিত প্রয়োগকারী কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।
গতকাল রাতে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সভায় তিনি তার মন্ত্রীর জন্য সাপ্লাই ২০২০ কমিটি পাস করতে গিয়ে বলেন, ‘বিদেশিরা যাতে আইন মেনে চলে তা নিশ্চিত করা নিয়ন্ত্রণের একটি পদক্ষেপ।’ মোহাম্মদ আজিস বলেন, ‘মন্ত্রণালয় বর্তমানে প্রশাসনকে শক্তিশালীকরণ এবং বিদ্যমান প্রয়োগকারী ব্যবস্থার ব্যবস্থার উন্নয়নের পদক্ষেপ হিসেবে পিএটিআইয়ের বিরুদ্ধে কার্যকর করার একটি সামগ্রিক পরিকল্পনা তৈরির কাজ করছে।’
অপরদিকে দেশটির সবকটি ইমিগ্রেশন অফিসে স্পেশাল পাস সংগ্রহ করতে হাজার হাজার অবৈধ বিদেশি কর্মীরা ভিড় করছেন। ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির আওতায় ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত ৬৬ হাজার ৩৬৪ জন অবৈধ অভিবাসী নিজ নিজ দেশে ফিরে যেতে আবেদন করেছেন। এর মধ্যে ৪৬ হাজার ৯৭৬ জন ব্যাক ফর গুডের আওতায় নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন এবং ১৯ হাজার ৩৮৮ জন নিজ দেশে ফিরে যেতে অপেক্ষায় রয়েছেন।
ব্যাক ফর গুড কর্মসূচির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে সবকটি বিমানের টিকিটের দাম পাঁচগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে কুয়ালালামপুর-ঢাকা রুটে যেখানে ৪০০ রিংগিতে মিলত টিকিট, এ কর্মসূচির শেষ সময়ে এসে তা হয়েছে ১৮শ থেকে ১৯০০ পর্যন্ত। তবুও মিলছে না বিমান টিকিট।
এদিকে, এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মহ. শহীদুল ইসলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সসহ সবকটি বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং কম মূল্যে টিকিট বিক্রি ও অতিরিক্ত ফ্লাইট বাড়িয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে সংশিষ্টদের আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশে ফিরতে প্রতিদিন মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস নিতেও ভিড় করছেন অবৈধ বাংলাদেশিরা। দূতাবাসে ট্রাভেল পারমিট (টিপি) ইস্যুতে কঠোর নজরদারির পরও থেমে নেই দালালদের দৌরাত্ম্য। কাউকে ট্রাভেল পাসের জন্য অর্থ দিয়ে থাকলে এবং প্রতারিত হলে তথ্য ও প্রমাণাদিসহ মিশনে যোগাযোগ করতে বলা হলেও অবৈধ বাংলাদেশিরা ট্রাভেল পাস পেতে পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।